শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
এক দশক আগেও বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর প্রয়োজনীয় কাপড়ের সিংহভাগই আমদানি করা হতো বাইরে থেকে। ফাস্ট ফরোয়ার্ড ২০১৮: বিশ্বের এক নম্বর তুলা আমদানিকারক দেশ এখন বাংলাদেশ। আগে এই তালিকার শীর্ষে ছিল চীন।
কীভাবে এটা সম্ভব হলো?
এক দশক আগেও বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়ের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। এখন দেশের কারখানায় তৈরি কাপড়ই নিজেদের চাহিদা পূরণ করছে। আর এই কাপড় তৈরি করতে যে পরিমাণ তুলা দরকার তার ৯৭ শতাংশ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। মূলত ভারত, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসে এই তুলা।
বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের পরিচালকদের একজন মোহাম্মদ আইয়্যুব জানাচ্ছেন, “টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে সবচাইতে বেশি তুলা দরকার হয়। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশই যে খাত থেকে আসে তার জন্য সবচাইতে দরকারি কাঁচামাল হল সুতা ও কাপড়। সেটি তৈরিতে বাংলাদেশের গত এক বছরে ৬৫ লক্ষ বেল তুলার দরকার হয়েছে।”
চলতি বছরে তুলার আমদানি ৭০ লক্ষ বেল-এ পৌঁছে যাবে বলে এই এসোসিয়েশন বলছে।
কয়েক দশক আগেও বাংলাদেশে স্পিনিং মিলের সংখ্যা ছিল নগণ্য।
কিন্তু এখন প্রায় ৫০০০ গার্মেন্টস কারখানা ৪২৫টি স্পিনিং মিল ও প্রায় ৮০০ টির মতো টেক্সটাইল কারখানাতে আমদানি করা তুলা থেকে তৈরি সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের রপ্তানি আয় এখন বছরে ৩০০ কোটি ডলার যা ২০২১ সালের মধ্যে ৫০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়ার টার্গেট নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেটি করতে সামনে বাংলাদেশ আরো বেশি তুলা আমদানি করবে বলেই হিসেব বলছে।
এক নজরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প:
গার্মেন্টস কারখানা: ৪৪৮২
টেক্সটাইল মিল: ৮০০
স্পিনিং মিল: ৪২৫
প্রতিবছর আমদানি: ৭০ লক্ষ বেল
২০২১ সালে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য: ৫০০ কোটি ডলার
সূত্র: বিজিএমইএ, কটন এসোসিয়েশন
কিন্তু বাংলাদেশ কেন নিজেই তুলা উৎপাদন করছে না?
বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ফরিদউদ্দিন বলছেন, বাংলাদেশের মোট কৃষি জমি সাড়ে ৮০ লক্ষ হেক্টর। তা দিয়ে বাংলাদেশ মূলত খাদ্য চাষ করে।
তিনি জানান, “তুলা চাষ করতে বেশ লম্বা সময় লাগে। যেমন ধরুন, তুলা ওঠা পর্যন্ত ছয় মাসের মতো অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু ঐ সময়ে কৃষকরা দুটি শস্য তুলে ফেলতে পারে।”
সেক্ষেত্রে তুলাকে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে সবজি ও কলার সাথে। কিন্তু এত বেশি মানুষের খাদ্যের যোগান যে দেশে করতে হয় সেখানে সেটি সম্ভব নয়।